প্রবাসী ভোটার তালিকায় ধীরগতি, অনুমোদন পেল ১৭ হাজারের বেশি আবেদন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ২০:২৯

বাংলাদেশি প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উদ্যোগ চললেও বাস্তবতা বলছে—প্রক্রিয়াটি এখনো কাঙ্ক্ষিত গতিতে অগ্রসর হচ্ছে না। ভোট প্রদান পদ্ধতি নির্ধারিত হলেও, বাস্তবে কতজন প্রবাসী এতে অংশ নিতে পারবেন তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।
বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে ভোটার নিবন্ধনের কার্যক্রম চালাচ্ছে ইসি। এ প্রক্রিয়ায় প্রবাসীদের প্রথমে অনলাইনে আবেদন করে পরে দূতাবাসে গিয়ে ছবি ও আঙুলের ছাপ দিতে হয়। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং সিঙ্গাপুরেও এই কার্যক্রম সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।
সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছে, এই সাতটি দেশ থেকে মোট ৪২,২৬৯টি আবেদন জমা পড়ে। যাচাই-বাছাই শেষে বাতিল হয়েছে ৩,৪০১টি। উপজেলা নির্বাচন অফিসের তদন্তাধীন রয়েছে ২০,১৮৪টি আবেদন। ইতোমধ্যে ১৭,৬০৭ জনের আবেদন চূড়ান্তভাবে অনুমোদন পেয়েছে। বাকি ৪৫৭টি আবেদন এখনো অনুমোদনের অপেক্ষায়। পাশাপাশি, ২২,১২৮ জন প্রবাসী ইতোমধ্যে দূতাবাসে গিয়ে প্রয়োজনীয় বায়োমেট্রিক তথ্য দিয়েছেন।
সর্বাধিক আবেদন এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে—১৮,৫৮৯টি। বিপরীতে, সবচেয়ে কম আবেদন মালয়েশিয়া থেকে—মাত্র ৭৮৪টি।
নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বের অন্তত ৪০টি দেশে বাংলাদেশি প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে। এই দেশগুলোতে ধাপে ধাপে ভোটার তালিকাভুক্তির কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তালিকায় রয়েছে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, তুরস্কসহ আরও অনেক দেশ। সৌদি আরবে রয়েছে সর্বাধিক ৪০ লাখ ৪৯ হাজার ৫৮৮ জন প্রবাসী। অন্যদিকে, সবচেয়ে কম বাংলাদেশি রয়েছেন নিউজিল্যান্ডে—মাত্র ২,৫০০ জন।
তবে কার্যক্রমে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বৈধ পাসপোর্টের অভাব। ইসি স্পষ্ট জানিয়েছে—অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ কাগজপত্রধারীর আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। অনেক প্রবাসী বৈধ কাগজপত্র না থাকায় কিংবা জটিলতা এড়িয়ে দূতাবাসে না যাওয়ার কারণে তালিকাভুক্ত হতে পারছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসি কর্মকর্তা জানান, “প্রবাসীদের বড় একটি অংশ নির্মাণ, কৃষি কিংবা হোটেল-রেস্তোরাঁ খাতে কর্মরত থাকেন। তাদের পক্ষে দূরবর্তী দূতাবাসে গিয়ে সময় দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। অনেকে আবার নিরক্ষর হওয়ায় প্রক্রিয়াটি বোঝেন না।”
সব মিলিয়ে, ইসির এই উদ্যোগ প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলেও, বাস্তব বাস্তবতায় এখনো তা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি।