শুরু হলো এ বছরের হজ ফ্লাইট, ঢাকাতেই দুই দেশের ইমিগ্রেশন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৪১

২০২৫ সালের পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীদের ফ্লাইট শুরু হয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত ২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রথম ফ্লাইটটি জেদ্দার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। হজ ফ্লাইট চলবে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত।
এবার বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে যাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছেন ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন। রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৫ সালের (১৪৪৬ হিজরি) হজ ফ্লাইটের উদ্বোধন করেন।
‘রোড টু মক্কা’ কর্মসূচি: ঢাকাতেই ইমিগ্রেশন সুবিধা
এবারও সৌদি সরকারের ‘রোড টু মক্কা’ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশি হজযাত্রীরা ঢাকাতেই সৌদি ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। এ জন্য সৌদি ইমিগ্রেশন দলের ৭৫ সদস্য ইতোমধ্যেই শাহজালাল বিমানবন্দরে অবস্থান করছেন। যাত্রার সময় এই সুবিধা থাকলেও, ফিরতি সময়ে হজযাত্রীদের সৌদি আরবেই ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দর দিয়ে যাত্রাকারীদের ক্ষেত্রে সৌদি ইমিগ্রেশন সৌদিতেই করা হবে। ফলে ঢাকাতেই ইমিগ্রেশন সুবিধার আওতায় থাকছে দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ হজযাত্রী।
যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ প্রস্তুতি
ঢাকায় আশকোনা হজ ক্যাম্পে বাংলাদেশ বিমানের জন্য ১০টি, সৌদি এয়ারলাইনসের জন্য ১০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারের জন্য ৬টি ইমিগ্রেশন ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি হজযাত্রীদের যাত্রার সময় যেসব যাত্রী নিয়মিত ফ্লাইটে যাবেন, তাদের জন্য শাহজালাল বিমানবন্দরের ২ নম্বর বহির্গমন টার্মিনালে আরও ১২টি ডেস্ক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাপনায় এবার প্রযুক্তি ব্যবহারে অগ্রগতি এসেছে। পূর্ব থেকেই যাত্রীদের তথ্য ইমিগ্রেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে সংযুক্ত করা হয়েছে, যাতে ১০–১৫ সেকেন্ডের মধ্যে একটি যাত্রীর ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হয়।
বিগত হজ মৌসুমের পরিসংখ্যান থেকে প্রস্তুতি
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনা মহামারির আগের বছরগুলোতে বাংলাদেশ থেকে বছরে এক লাখের বেশি মানুষ হজে গেছেন। যেমন ২০১৭ সালে হজযাত্রী ছিলেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৩৮ জন, ২০১৮ সালে ১ লাখ ২৭ হাজার ২৮৭ জন এবং ২০১৯ সালে ১ লাখ ২৭ হাজার ৬০৭ জন।
২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার কারণে হজ কার্যক্রম স্থগিত ছিল। ২০২২ সালে সীমিত আকারে হজ শুরু হলে অংশ নেন ৬২ হাজার ২৫ জন। ২০২৩ সালে স্বাভাবিকভাবে হজ পরিচালিত হয়, অংশ নেন ১ লাখ ২২ হাজার ৫৬৯ জন।
২০২৪ সালে হজের ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় যাত্রীর সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৮৫ হাজার ৪ জনে। তবে এবার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে ৮৭ হাজার ১০০ জনে পৌঁছেছে।
হজ ফ্লাইট পরিচালনায় তিনটি এয়ারলাইনস
এবারের হজে যাত্রী পরিবহনে অংশ নিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, সৌদি এয়ারলাইনস এবং ফ্লাইনাস এয়ার। বিমান বাংলাদেশ পরিচালনা করবে হজের আগে ১১৮টি এবং পরে ১০৯টি ফ্লাইট। সৌদি এয়ারলাইনস পরিচালনা করবে হজের আগে ৮০টি এবং পরে ৭৯টি ফ্লাইট। ফ্লাইনাস পরিচালনা করবে হজের আগে ৩৪টি এবং পরে ৩৫টি ফ্লাইট।
প্রথম ফিরতি হজ ফ্লাইট দেশে ফিরবে ১০ জুন এবং শেষ ফ্লাইট আসবে ১০ জুলাইয়ের মধ্যে।
এই বছরের হজ ব্যবস্থাপনায় বিগত বছরের অভিজ্ঞতা ও চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সরকার। আশা করা হচ্ছে, উন্নত সেবা ও সময়োপযোগী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এবারের হজযাত্রা আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে।
তথ্য সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো