চলতি অর্থবছর শেষ হতে এখনও সময় বাকি থাকলেও প্রবাসী আয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মে মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত দেশে প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রাপ্তি। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২৪ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রবাসী আয়ের এই ঊর্ধ্বগতি দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে চলতি হিসাবের ঘাটতিও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ সময়কালে চলতি হিসাবে ঘাটতি কমেছে প্রায় ৮৫ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এ সাফল্যের পেছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ কাজ করেছে—এর মধ্যে রয়েছে অর্থ পাচার হ্রাস, রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার আমদানির তুলনায় বেশি থাকা এবং সরকারের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর প্রবাসীদের আস্থা পুনঃস্থাপন।

গত সরকার আমলে প্রবাসীরা অর্থ পাঠানোর হার অনেকটা কমিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর, বিশেষ করে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্ব গ্রহণের পর পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে। প্রবাসীরা আবারও নিয়মিতভাবে দেশে অর্থ পাঠাতে শুরু করেন, যার ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে, আসন্ন ঈদুল আজহা সামনে রেখে চলতি মে মাসজুড়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও চাঙ্গা থাকবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ঈদকেন্দ্রিক খরচ, পরিবার-পরিজনের চাহিদা মেটানো এবং কোরবানির প্রস্তুতির জন্য অনেক প্রবাসী এখনই অর্থ পাঠাতে শুরু করেছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও কিছুটা স্বস্তির জায়গায় ফিরে যেতে পারে।