ঈদের রেশ কাটলেও প্রবাসী আয়ে চাঙ্গাভাব, ১৯ দিনে এসেছে ১৭২ কোটি ডলার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ২৩:৪০

ঈদুল ফিতর শেষে রেমিট্যান্স প্রবাহে কোনো ভাটা পড়েনি বরং ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনেই দেশে এসেছে প্রায় ১৭২ কোটি মার্কিন ডলার। গড়ে প্রতিদিন প্রবাসীরা ৯ কোটি ডলারেরও বেশি পাঠাচ্ছেন। এ গতি অব্যাহত থাকলে পুরো এপ্রিল মাসেই রেমিট্যান্স ৩০০ কোটি ডলারের ঘর ছুঁতে পারে বলে আশাবাদ ব্যাংকারদের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিলের ১ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসী আয়ের বড় একটি অংশ এসেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে—৬৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। বাকি অংশের মধ্যে কৃষি ব্যাংক এনেছে ৯ কোটি ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলো প্রায় ৯৯ কোটি ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে প্রায় ৩৩ লাখ ডলার।
এর আগে মার্চ মাসে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, যা দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ। মূলত রমজান ও ঈদুল ফিতরকে ঘিরেই এই অভূতপূর্ব প্রবাহ দেখা যায়।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, অর্থ পাচারের সুযোগ কমে যাওয়ায় এবং ডলারের বাজারে তুলনামূলক স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় প্রবাসীরা এখন বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলেই অর্থ পাঠাতে বেশি আগ্রহী। এখন ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত সর্বোচ্চ ১২৩ টাকায় ডলার কিনছে, আর খোলাবাজারে ডলারের দর রয়েছে ১২৪ টাকা ৩০ পয়সার আশেপাশে।
গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতি মাসেই ২০০ কোটির বেশি ডলার দেশে পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। উদাহরণস্বরূপ, ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। জানুয়ারিতেও ছিল ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের (জুলাই-মার্চ) প্রথম আট মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২ হাজার ১৭৭ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে এ পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭০৭ কোটি ডলার।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রেমিট্যান্স দেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়মুক্ত বৈদেশিক মুদ্রার উৎস। কারণ, এই অর্থের বিপরীতে কোনো পণ্য আমদানি বা ঋণ পরিশোধ করতে হয় না। ফলে এটি সরাসরি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সাহায্য করে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব রাখছে এই প্রবাহ। রেমিট্যান্সের এই ধারা অব্যাহত থাকলে ডলার সংকট আরো কমবে এবং দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে তা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।