দুই ঘণ্টা সাঁতার কেটে ইউরোপে পাড়ি দিলেন গর্ভবতী ফাতিমা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৯

নবজাতক সন্তানের সঙ্গে ফাতিমা
সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় প্রাণ বাজি রেখে আট মাসের গর্ভবতী ফাতিমা পাড়ি দেন ইউরোপে। মরোক্কো থেকে সাঁতরে তিনি পৌঁছে যান ইউরোপের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত স্পেনের ছিটমহল সেউটায়। রাতে ঘন কুয়াশার মধ্যে, নজরদারির ফাঁকি দিয়ে দুই ঘণ্টা ধরে সাঁতরিয়ে পৌঁছান স্প্যানিশ সীমান্তে।
৩২ বছর বয়সী এই নারী জানতেন, তার সামনে মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে। তবুও তিনি থামেননি। তাঁর ভাষায়, “আমি জানতাম আমরা পারব। আমার সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য এই ঝুঁকি নেওয়াটাই ধরকার ছিল।”
ফাতিমার এই সাহসিকতার ফসল ইতোমধ্যেই হাতেনাতে পেয়েছেন—তার সন্তান জন্ম নিয়েছে স্প্যানিশ ভূখণ্ডেই। বর্তমানে তারা দু’জনই সেউটার একটি শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।
ফাতিমার স্বামী হিচামও একইভাবে জীবন বাজি রেখে পাড়ি জমিয়েছেন সেউটায়। আগস্টের ২৫ তারিখে, প্রায় দেড় হাজার অভিবাসীর সঙ্গে তিনিও মরোক্কো থেকে সাঁতরে পৌঁছান তারায়াল সমুদ্রতটে। ঢেউয়ের অনুকূল অবস্থা ও কুয়াশার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওই দিন বহু মানুষ সেউটায় প্রবেশ করেন।
হিচামের কথা, “আমি চেয়েছিলাম আমার সন্তান এমন একটি স্থানে জন্ম নিক, যেখানে তার অধিকার থাকবে, থাকবে সম্ভাবনার একটি দিগন্ত।”
তবে আশ্রয়কেন্দ্রে স্থান সংকটের কারণে এই দম্পতি আপাতত রাস্তায় রাত কাটাচ্ছেন। অভিবাসীদের ক্রমবর্ধমান ভিড় সামাল দিতে স্থানীয় প্রশাসন তারায়াল শিল্প এলাকার একটি পুরনো গুদামকে অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে রূপান্তর করেছে।
সেউটা হয়ে উঠেছে নতুন ‘প্রবেশদ্বার’
সেউটা এখন শুধু মরোক্কো ও আলজেরিয়া নয়, আফ্রিকার সাব-সাহারান অঞ্চল, এমনকি সংঘাতপূর্ণ দেশ যেমন মালি থেকেও হাজার হাজার মানুষের ইউরোপে ঢোকার প্রবেশপথে পরিণত হয়েছে।
এ বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৫২০ জনের বেশি অভিবাসী এই শহরে পৌঁছেছেন। শুধুমাত্র আগস্টেই সংখ্যা তিন শতাধিক ছাড়িয়েছে, যাদের বেশিরভাগই সাগর পাড়ি দিয়ে এসেছেন। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা প্রায় ছয় গুণ বেড়েছে।
অভিবাসী শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের আশ্রয় ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন এখন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।