
বিদেশে যেতে হলে দালাল ধরতে হয় কিংবা অনেক অর্থের প্রয়োজন এমনটি প্রচলিত কথা। এই কথাটির সঙ্গে বাস্তবতার অনেক মিল আছে। কিন্তু অল্প খরচে ও দালাল না ধরেও বিদেশে যাওয়া সম্ভব।
এজন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট এন্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) দিকে নজর রাখতে হবে।
সরকারি এই সংস্থাটি নামমাত্র খরচে বাংলাদেশিদের বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে থাকেন। বোয়েসেলের মাধ্যমে বিদেশে গেলে সকল খরচ কম্পানি বহন করে থাকে।
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যেভাবে কাজ করে বোয়েসেল :
১. চাহিদাপত্র (Demand Letter) পাঠানো :
বিদেশি নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান চাইলে সরাসরি বোয়েসেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে বা নিকটস্থ বাংলাদেশ মিশনে প্রয়োজনীয় তথ্যসহ একটি চাহিদাপত্র পাঠাতে পারে। এতে উল্লেখ থাকতে হবে চাকরির ধরন, জনবল সংখ্যা, বেতন, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্য সুবিধা।
২. পাওয়ার অব অ্যাটর্নি (Power of Attorney):
নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের পাসপোর্টে ভিসা লাগাতে হলে নিয়োগদাতাকে বোয়েসেলকে নিয়োগ এবং ভিসার জন্য আবেদন করার অনুমতি দিতে হয়। এই পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ মিশনের শ্রম সচিবালয় কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে।
৩. ভিসা অ্যাডভাইস/এনওসি/ওয়ার্ক পারমিট :
বোয়েসেলের কাছে পাঠাতে হবে সেই দেশের সরকারি কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র। যেমন ভিসা অ্যাডভাইস, এনওসি বা ওয়ার্ক পারমিট।
৪. কর্মচুক্তি (Employment Contract):
ইংরেজি ভাষায় একটি চুক্তিপত্র পাঠাতে হবে, যাতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে—বেতন ও কর্মঘণ্টা, ওভারটাইম ও ভ্রমণ ব্যয়, চিকিৎসা সুবিধা, খাদ্য ও আবাসনের শর্তাবলি, সাপ্তাহিক ও বাৎসরিক ছুটি এবং সংশ্লিষ্ট দেশের শ্রম আইনের অধীনে অন্যান্য সুবিধা।
৫. এজেন্সি চুক্তি (Agency Agreement):
বোয়েসেল ও নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি এজেন্সি চুক্তি হতে পারে, যেখানে উভয় পক্ষের দায়িত্ব ও শর্তাবলি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে।
কর্মী নির্বাচনের ধাপসমূহ :
১. বিজ্ঞাপন প্রকাশ
বৈধ চাহিদাপত্র পাওয়ার পর বোয়েসেল পত্রিকা, ওয়েবসাইট, নোটিশ বোর্ড অথবা নিজস্ব তথ্যভাণ্ডার থেকে উপযুক্ত প্রার্থীদের খোঁজ শুরু করে।
২. জীবনবৃত্তান্ত (CV) সংগ্রহ ও যাচাই:
আগ্রহী প্রার্থীদের থেকে প্রাপ্ত জীবনবৃত্তান্ত যাচাই করে প্রয়োজন অনুযায়ী সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করে।
৩. প্রার্থী নির্বাচন
নিয়োগদাতা বা তাদের প্রতিনিধি সরাসরি সাক্ষাৎকার ও ট্রেড টেস্টের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করেন।
বোয়েসেলের প্রয়োজনীয় সহায়তা; যেমন- ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু, জায়গা বরাদ্দ, পরীক্ষা ইত্যাদি পরিচালনা করে।
৪. মেডিক্যাল পরীক্ষা:
চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের নির্ধারিত মেডিক্যাল সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়, যা সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস কর্তৃক অনুমোদিত হয়।
কেন বোয়েসেলের মাধ্যমে বিদেশে কাজের জন্য আবেদন করবেন?
স্বচ্ছ ও সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন প্রক্রিয়া, অতিরিক্ত দালালি খরচ নেই, নিরাপদ অভিবাসন ও চুক্তিভিত্তিক এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধান ।
চাকরি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে খোঁজ করতে পারেন www.boesl.gov.bd ।