স্ত্রী প্রবাসে, শ্যালিকাকে নিয়ে উধাও দুলাভাই

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ২২:১৪

বুকে পাথর বেধে এক হৃদয়বিদারক ও সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন বরগুনার আমতলীর এক প্রবাসী নারী, ফাহিমা আক্তার। ছোট বোনের মুখে হাসি ফোটাতে তিনি নিজের ঘর ভাঙার কষ্ট বুকে চেপে তালাক দিয়েছেন স্বামীকে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) আমতলী উপজেলার পূর্ব চিলা গ্রামে ঘটে যাওয়া এ ঘটনা যেন বাস্তব জীবনের কোনো সিনেমার কাহিনি।
জানা যায়, ২০২০ সালে ফাহিমার বিয়ে হয় আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামের মোটরসাইকেল চালক রনি খাঁনের সঙ্গে। তিন বছরের সংসারে তাদের একটি পুত্রসন্তানও রয়েছে। সংসারের আর্থিক টানাপোড়েনে ২০২৩ সালে কাতারে পাড়ি জমান ফাহিমা। দূরে থাকার সেই সময়েই তার স্বামী প্রেমে জড়ান শ্যালিকার—মাত্র ১৬ বছর বয়সী ফাহিমার ছোট বোনের সঙ্গে।
শুরুতে এই খবর শুনেও মন শক্ত রেখেছিলেন ফাহিমা। স্বামীর প্রতি বিশ্বাস রেখে সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু গত রোববার রাতে স্বামী যখন শ্যালিকাকে নিয়ে পালিয়ে যান, তখন আর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। তবুও ভেঙে না পড়ে তিনি নিলেন সাহসী সিদ্ধান্ত—মঙ্গলবার রনি খাঁনকে আনুষ্ঠানিকভাবে তালাক দেন।
“যারা ভালোবাসে, তারা বন্ধনেও রাখে না, বাঁধেও না। স্বামী আর বোন যদি একসঙ্গে সুখে থাকতে চায়, আমি তাদের সে জায়গা ছেড়ে দিলাম,” কাঁপা কণ্ঠে বললেন ফাহিমা।
তিনি আরও বলেন, “আমি চাই তারা সুখে থাকুক। আমার সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে আমি বাঁচবো, ওর জন্যই নতুন করে জীবন গড়বো।”
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ফাহিমার এমন সাহসিকতা ও আত্মত্যাগ খুব কম নারীর মধ্যেই দেখা যায়। তার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সবাই।
এদিকে স্বামী রনি খাঁন শ্যালিকাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি তাকে। শুনেছি আমার স্ত্রী তালাক দিয়েছে।”
আমতলী পৌরসভার বিবাহ রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান জানান, তালাকের প্রক্রিয়া তার অফিসে সম্পন্ন হয়েছে।
এ বিষয়ে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।