আবারও খুলছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার: বৈধতা পাচ্ছেন অবৈধ কর্মীরাও

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ২০:২৪

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর আগামী জুন মাস থেকে পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে। এই সিদ্ধান্তটি শুধু নতুন শ্রমিক নিয়োগের পথ উন্মুক্ত করছে না, বরং দেশটিতে অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীদের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ এনে দিচ্ছে বৈধ হওয়ার।
গত ৮ মে, মালয়েশিয়ার পুত্রজায়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং কৃষি ও প্লান্টেশন মন্ত্রণালয়ের এক যৌথ উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সংশ্লিষ্ট তিন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে। সেখানে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় প্রায় ১০ লাখ বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের জন্য, যার মধ্যে বাংলাদেশের মতো শ্রমিক-রপ্তানিকারক দেশগুলোর জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেল।
অতীত অভিজ্ঞতা ও প্রেক্ষাপট
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার গত কয়েক বছরে নানা কারণে বেশ কয়েকবার বন্ধ হয়ে যায়। অতিমারির সময় জনশক্তি আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ, অব্যবস্থাপনা, দালালচক্রের দৌরাত্ম্য এবং দ্বিপাক্ষিক জটিলতার কারণে বহু বাংলাদেশি কর্মীর স্বপ্ন থেমে যায়। আবার যারা বৈধভাবে প্রবেশ করেছিলেন, তাদের একাংশ সময়মতো পাসপোর্ট নবায়ন বা ভিসা হালনাগাদ করতে না পারায় "অবৈধ" হয়ে যান।
মালয়েশিয়া সরকার এবার সেই অবৈধ অভিবাসীদের বৈধকরণের একটি নতুন প্রক্রিয়া চালু করতে যাচ্ছে, যা অনেকের জন্য এক নতুন জীবন শুরু করার সুযোগ হয়ে উঠতে পারে।
নিয়োগ প্রক্রিয়া ও নিয়োগকর্তার ভূমিকা
তবে এখনো পরিষ্কার নয়, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া কীভাবে পরিচালিত হবে—সরকারি পর্যায়ে, না কি সরাসরি নিয়োগকর্তার মাধ্যমে। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কোন দেশ থেকে কত শ্রমিক নেওয়া হবে, সেটি নির্ধারণ করবেন সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তারা। এতে করে নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও বেশি ব্যবসায়িক চাহিদা ও দক্ষতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে।
সম্ভাব্য প্রভাব
এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক পাঠানোর পথ প্রশস্ত হতে পারে। তবে সবকিছু নির্ভর করবে সরকারের মধ্যে সমন্বয়, নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং দালাল মুক্ত পরিবেশ তৈরির ওপর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি এই উদ্যোগ সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এটি মালয়েশিয়ার অভ্যন্তরীণ শ্রম ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি অভিবাসীদের জীবনে স্থিতিশীলতা আনবে।