সৌদি যাওয়ার দুই মাসের মাথায় লাশ হয়ে ফিরলেন নুর আলম

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, ১৩:২৬

নুর আলম খান। ছবি: সংগৃহীত
আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ধার-দেনা করে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন নুর আলম খান (৩৫)। সৌদি যাওয়ার মাত্র দুই মাসের মাথায় মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিনি। আহত অবস্থায় সৌদির একটি হাসাপাতালে ভর্তির পর জীবন বাঁচাতে প্রথমেই তার দুইটি পা কেটে ফেলা হয়। পা হারানোর ২০ দিন পর মারা যান নুর আলম।
এরপর অন্তত ৩ মাস সৌদিতে তার লাশ পড়েছিলো। অনেক চেষ্টার পর অবশেষে শনিবার (১৭ মে) ভোর ৫ টার দিকে নুর আলমের লাশ বাড়িতে এসে পৌঁছায়।
নুর আলম ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত উমর আলী খানের ছোট ছেলে। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। তার স্ত্রী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
নুর আলমের ভায়রা ভাই মো. মাহফুজুর রহমান খান বলেন, ‘নুর আলম কৃষক ছিলেন। যা আয় করতেন, তা দিয়ে ঠিকমতো সংসার চলতো না তার। তাই দুই সন্তান ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর কথা চিন্তা করে ২০২৪ সালের শেষের দিকে সৌদি আরবে পাড়ি জমান নুর আলম। তবে সৌদি যাওয়ার মাত্র ২ মাসের মাথায় গত ২০ জানুয়ারী সৌদি আরবের রিয়াদে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত আহত হন তিনি। আহত অবস্থায় তাকে রিয়াদ ক্যান্টনমেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির পর জীবন বাঁচাতে তার দুইটি পা কেটে ফেলেও তাকে বাঁচাতে পারেনি চিকিৎসকরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেখানে টানা ২০ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে ১১ ফেব্রুয়ারি চকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুর পর তার লাশ টানা ৩ মাস সৌদি হাসপাতালে পড়েছিলো। আমরা অনেক চেষ্টা করার পর সরকারের সহযোগিতায় শনিবার ভোরে তার লাশ বাড়িতে এসে পৌছায়। লাশ বাড়িতে আসার পর স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে পরিবেশ। সকাল ৯ টায় নামাজে জানাজা শেষে তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।’
পরিবারের সদস্যরা জানান, আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ৩-৪ লাখ টাকা ধার নিয়ে সৌদি গিয়েছিলেন নুর আলম। বসতভিটা ছাড়া তার কোনো জমি-জমা নাই। এমন অবস্থায় নুর আলম মারা যাওয়ায় সন্তানদের নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আনিছুর রহমান বালী বলেন, ‘সৌদি থেকে নুর আলমের লাশ দেশে আনার ব্যাপারে আমরা সহযোগিতা করেছিলাম। এখন আমরা তার স্ত্রী-সন্তানদের অসহায়ত্বের বিষয়টি জানতে পেরেছি। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে নুর আলমের পরিবার সহযোগিতা পাবে এবং তারা চাইলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে।’