দুবাইয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে কিস্তিতে স্বর্ণ কেনা
স্বর্ণের দামে আগুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:২৩

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে দুবাইয়ের স্বর্ণবাজারে। মূল্যবৃদ্ধির এই সময়ে ক্রেতারা বদলে ফেলেছেন কেনাকাটার ধরন। এখন অনেকেই মাসিক কিস্তিতে স্বর্ণ কিনছেন। এককালীন বড় অঙ্কের টাকা খরচ না করে ধাপে ধাপে সঞ্চয়ের মাধ্যমে তারা সোনার মালিক হচ্ছেন।
গত ছয় মাসে স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। চলতি মাসে দুবাইয়ে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম প্রতি গ্রাম দাঁড়িয়েছে ৪১২ দিরহাম, আর ২২ ক্যারেটের দাম ৩৮৮ দিরহাম। বাংলাদেশি টাকায় যা যথাক্রমে প্রায় ১৩ হাহার ৬৬৮ টাকা ও ১২ হাজার ৮৬২ টাকা (প্রতি দিরহাম ৩৩.১৭ টাকা ধরে)।
কিস্তিতে সোনা কেনার নতুন ধারা
দুবাইয়ের শীর্ষস্থানীয় জুয়েলারি দোকানগুলো এখন নানা ধরনের কিস্তি সুবিধা দিচ্ছে। মাসে মাত্র এক হাজার থেকে দুই হাজার দিরহাম দিয়েই শুরু করা যাচ্ছে সঞ্চয়। চাইলে এর চেয়ে কমেও কিস্তি নির্ধারণ করা যাচ্ছে। নির্দিষ্ট সময় পর সেই সঞ্চিত অর্থে ক্রেতারা স্বর্ণের বার, কয়েন, অলংকার বা অন্যান্য রূপে স্বর্ণ কিনতে পারছেন।
স্থানীয় বিক্রেতারা বলছেন, দাম যেভাবে বাড়ছে, তা দেখে অনেকেই এখন থেকেই ‘ধাপে ধাপে’ স্বর্ণ কেনাকাটা শুরু করছেন। এতে হঠাৎ দাম বাড়লেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না।
শুধু অলংকার নয়, বিনিয়োগও
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের তথ্য বলছে, গত এক বছরে গয়নার বিক্রি কিছুটা কমলেও স্বর্ণের বার ও কয়েনের চাহিদা বেড়েছে। অর্থাৎ, সোনাকে এখন অলংকারের পাশাপাশি একটি নিরাপদ ও লাভজনক বিনিয়োগ হিসেবেও বিবেচনা করছেন ক্রেতারা।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, স্বর্ণ কেনার ধরণে এই পরিবর্তন বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতারই প্রতিফলন। অনেকেই এখন ভবিষ্যতের জন্য সোনাকে নিরাপদ ভাণ্ডার হিসেবে দেখছেন।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই সোনা
দুবাইয়ের ক্রেতাদের মধ্যে এখন স্বর্ণ কেনার আগে চিন্তা ও পরিকল্পনার ছাপ স্পষ্ট। দাম কমার অপেক্ষায় না থেকে তারা ছোট ছোট কিস্তিতে সঞ্চয় করছেন। পরে সুবিধাজনক সময়ে সেই টাকায় স্বর্ণ কিনছেন। এ পদ্ধতিকে অনেকেই বলছেন ‘স্মার্ট ইনভেস্টমেন্ট’।
একজন স্থানীয় ক্রেতা গালফ নিউজকে বলেন, ‘আগে হুট করেই সোনা কিনে ফেলতাম। এখন মাসে মাসে কিছু টাকা রাখি, পরে সোনায় রূপান্তর করি। এতে চাপও কম, লাভও হয়।’
স্বর্ণের দাম বেড়েই চলেছে। তবে তার প্রভাব কেবল দামের রেখাচিত্রে আটকে নেই, বদলে যাচ্ছে মানুষের অভ্যাসও। দুবাইয়ের ক্রেতারা এখন শুধু স্বর্ণ কিনছেন না, বরং একটি সোনালি ভবিষ্যতের পরিকল্পনাও করছেন—ধাপে ধাপে, সঞ্চয়ের মাধ্যমে।